আমার প্রিয় শখ এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকাশিত ডাকটিকেট
প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু একটা প্রিয় শখ রয়েছে। কিংবা কারো রয়েছে একাধিক শখ। কারো কারো শখ ভ্রমণ করা কিংবা ঘুরে বেড়ানো, কারো কারো শখ ছবি তোলা অথবা কারো কারো শখ ডাকটিকেট সংগ্রহ করা ইত্যাদি। ডাকটিকেট সংগ্রহকে “শখের রাজা” বলা হয়। পূর্বোল্লিখিত ৩টি শখই আমার প্রিয় শখ। ছোটবেলা থেকে যেমন ভ্রমণ করতে পছন্দ করতাম তেমনি পছন্দ করতাম ডাকটিকেট সংগ্রহ করতে। আর সময় পেলে শখের বসে ছবিও তুলি।
এবার আমার ডাকটিকেট সংগ্রহের ব্যাপারে কিছু কথা বলা যাক। এ পর্যন্ত আমার সংগ্রহে রয়েছে বাংলাদেশ সহ ৪৬টি দেশের মোট ৮২৭টি ডাকটিকেট। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে বিদেশি ডাকটিকেটগুলো আমি কিভাবে সংগ্রহ করেছি কিংবা করি। বেশিরভাগ বিদেশি ডাকটিকেটই আমি আমার বাবার সাহায্যে সংগ্রহ করেছি। মধ্যপ্রাচ্যে বাবার ব্যবসার সুবাধে ছোটবেলা থেকেই বাবাকে আবদার করতাম যেন দেশে আসার সময় আমার জন্য বিভিন্ন দেশের ডাকটিকেট নিয়ে আসে। বাবা যখনি দেশে আসতেন তখনি আমার জন্য ডাকটিকেট নিয়ে আসতেন। এছাড়া কয়েকজন আত্নীয়ের মাধ্যমেও আমি বিদেশি ডাকটিকেট সংগ্রহ করি। তাদের কে বলি যে, দেশে আসার সময় কিংবা দেশে উনাদের পরিবারের কাছে কিছু পাঠানোর সময় আমার জন্য যেন বিভিন্ন দেশের ডাকটিকেট পাঠায়। যখন তারা আমার কাছে ডাকটিকেট পাঠান ডাকটিকেটের সমপরিমান মূল্য আমি তাদের পরিশোধ করে দিই। আর বাংলাদেশি ডাকটিকেটগুলো বিশেষকরে স্মারক ডাকটিকেটগুলো আমি G.P.O (General Post Office) থেকে সংগ্রহ করি।
বাংলাদেশ সহ যে ৪৬টি দেশের ডাকটিকেট আমার সংগ্রহে রয়েছে সেসব দেশসমূহ হলোঃ শ্রীলংকা, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, ওমান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, ইরান, ইরাক, ইয়েমেন, সিরিয়া, কাতার, মালেয়শিয়া, জর্ডান, সুদান, সোমালিয়া, লিবিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মিশর, মাল্টা, মালি, গিনি, মৌরিতানিয়া, জ্যামাইকা, সাইপ্রাস, ইটালি, ডেনমার্ক, কানাডা, বেলারুশ, হাঙ্গেরি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, চেকস্লোভিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং চিলি।
এবার আমার সংগ্রহে থাকা মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকাশিত ডাকটিকেটসমূহ দেখে নেয়া যাক-
উপরের এই ৮টি ডাকটিকেট একত্রে প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালের ২৯শে জুলাই। যুক্তরাজ্যের সহায়তায় এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে এই ৮টি ডাকটিকেট প্রকাশিত হয়। এই ডাকটিকেটগুলোর নকশা করেন বিমান মল্লিক, যিনি যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় ডাকটিকেটেরও নকশা করেছিলেন। এই ৮টি ডাকটিকেট একযোগে মুজিবনগর, কলকাতা এবং লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল সে সময়ে। ফরম্যাট ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস নামের যুক্তরাজ্যের একটি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান এই ডাকটিকেটগুলো প্রকাশ করে।
Posted on মার্চ 17, 2012, in বিবিধ and tagged ডাকটিকেট, মুক্তিযুদ্ধ, শখ. Bookmark the permalink. 18 টি মন্তব্য.
চমৎকার লাগলো অনেক। আপনার বিভিন্ন দেশের ডাকটিকিটের সংগ্রহ বেশ প্রশংসনীয়। এক সময় আমারও এই শখ ছিল অনেক। প্রায় ১০০ দেশের মতো ডাকটিকিট ছিল। সবই এখন এক কাজিনের সম্পত্তিতে চলে গিয়েছে।
অনেক ভাল লাগলো রুমান ভাই।
১০০ টি দেশের ডাকটিকেট আপনার সংগ্রহে ছিল!! ডাকটিকেট সংগ্রহ করে আসলে অন্যরকম একটা আনন্দ পেয়ে থাকি, তাই এখনো নিয়মিত সংগ্রহ করে যাই।
ধন্যবাদ দাইফ ভাই।
হা ভাইয়া, অনেক দেশের ছিল। বিভিন্ন দেশে ছোট থাকতেই বেড়ানো, বাবার থেকে, বাবার বন্ধুদের থেকে সব সংগ্রহ করেছিলাম। চেষ্টা থাকতো যত বেশি সম্ভব দেশের সংখ্যা বাড়ানোর। কত নানান আকৃতির ডাকটিকিট যে ছিল। আপনার পোস্টটি নিয়ে গেলো সেই শৈশবে।
ধন্যবাদ আপনাকেও।
যখন এই পোষ্টটা লিখছিলাম তখন আপনার মতো আমাকেও আমার শৈশবে নিয়ে গিয়েছিল! আপনার ডাকটিকেট সংগ্রহ করা নিয়ে একটা পোষ্ট আশাকরছি।
montobbo korar vasa hariye felsi…….
simply osadharon
ধন্যবাদ জান্নাত।
apnakeo dhonnobad
আমি মুগ্ধ আপনার এই অসাধারন সংগ্রহ দেখে :) ! সুন্দর এই অমূল্য পোষ্টের জন্য উত্তম ঝাঁঝাঁ!!
ধন্যবাদ সেনাপতি। :)
রুমান,
অসাধারণ!!! বিরামহীন চালিয়ে যাও……একসময় হয়তো তোমার নামটা গিনেস্ বুক অভ ওয়ার্ল্ড এ উঠে আসবে…..সেই মাহেন্দ্রক্ষণের প্রতিক্ষায় থাকলাম।
তোমার জন্য দুইটি লাইন (একটি আমার)
ছোট ছোট বালিকণা বিন্দু বিন্দু জল,
গড়ে তুলে মহাদেশ সাগর অতল।
একটা একটা ডাকটিকিত ছোট ছোট খন্ড,
তোমায় একদিন চিনবে জগৎ-বিশ্বভ্রহ্মান্ড।
আপনার মন্তব্য পড়ে খুব খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
তবে ডাকটিকেট সংগ্রহ করে গিনেস বুকে নাম উঠাতে হলে কী পরিমাণ ডাকটিকেট সংগ্রহ করতে হবে সেটা আমার অজানা!
ভালো থাকবেন সবসময়।
অসাধারণ…।।
আমরা ছোট বেলায় এমন ডাক টিকেটের জমাতাম কিন্তু পরে আর ধরে রাখতে পারি নাই।
আপনার মন্তব্য দেখে ভালো লাগলো সাহাদাত ভাই।
ভালো থাকবেন।
আপনার এই শখটি আমার মনে ধরল। :)
ধন্যবাদ ফেরদৌস ভাই। :)
দারুন ব্লগ – আপনার বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের ছবি দেখে আমার নিজের ছটবেলার শখের কথা মনে পরে গেল। মামা আমাকে Bangaladesh Liberation First Day Cover উপহার দিয়েছিলেন। আমার বয়স তখন ৮ বছর। সেই স্মৃতিটা আবার ফিরে এল আপনার ব্লগ পরে।
ডাকটিকেট এখনোও সংগ্রহ করি আমি। আপনার সে সময়কার স্মৃতি নিয়ে লিখুন।
আপনাকে ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকবেন।