আইনগত সহায়তা প্রদান কী এবং কেন?

“সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।” বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭নং অনুচ্ছেদে এমনটিই বলা আছে। কিন্তু আমাদের দেশের দরিদ্র বিচারপ্রার্থীরা যখন নিজেদের দেওয়ানী অধিকার রক্ষার্থে অর্থের অভাবে আইনগত সহায়তা পান না অথবা আইনজীবি নিয়োগ দিতে পারেন না কিংবা আদালতে যাওয়া-আসার খরচ পর্যন্ত বহন করতে পারেন না তথা আইনগত সহায়তা পান না তখন মৌলিক অধিকারের এই সাংবিধানিক অঙ্গীকার অর্থহীন বলে মনে হয়।

২০০০ সালের আগ পর্যন্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরকারীভাবে আইনগত সহায়তা প্রধানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অগ্রগতি দেখা যায়নি। যদিও বেশকিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (এনজিও) আইনী সহায়তা দিয়ে আসছিল। অবশেষে ২০০০ সালে Canadian International Development Agency’র সহযোগিতায় সরকার দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের জন্য আইনগত সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০” পাশ করে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে আইনগত সহায়তা প্রদান বলতে কী বুঝায়? “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০” এর ২(ক) উপ-ধারা অনুযায়ী আইনগত সহায়তা অর্থ- আর্থিক অসচ্ছল অথবা নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীকে আইনী সহায়তা প্রদান করা। যেমন- কোনো আদালতে দায়েরযোগ্য, দায়েরকৃত বা বিচারাধীন মামলায় আইনগত পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান কিংবা মামলার প্রাসঙ্গিক খরচ প্রদানসহ অন্য যে কোনো সহায়তা প্রদান।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এবং জাতীয় পরিচালনা বোর্ডঃ আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’এর ধারা ৩ অনুযায়ী- “জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা” নামে একটি সংস্থা রয়েছে যেটি এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে। ধারা ৫ অনুযায়ী জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা পরিচালিত হবে “জাতীয় পরিচালনা বোর্ড”এর মাধ্যমে। ধারা ৬ অনুযায়ী জাতীয় পরিচালনা বোর্ড নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হবেঃ

১/ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। যিনি সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হবেন।

২/ জাতীয় সংসদের স্পীকার মনোনীত ২ জন সংসদ সদস্য। যাদের মধ্যে একজন হবেন সরকার দলীয় এবং অপরজন হবেন বিরোধী দলীয়।

৩/ অ্যাটর্নী জেনারেল।

৪/ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব।

৫/ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব।

৬/ সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব।

৭/ মহা-পুলিশ পরিদর্শক।

৮/ মহা-কারা পরিদর্শক।

৯/ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান।

১০/ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সভাপতি।

১১/ জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান।

১২/ সরকার কর্তৃক মনোনীত আইন ও মানবাধিকার সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠিত এমন বেসরকারী সংস্থার ৩ জন প্রতিনিধি, যারা বিভিন্ন জেলায় এই বিষয়ে কাজ করছে।

১৩/ সরকার কর্তৃক মনোনীত প্রতিষ্ঠিত নারী সংস্থার ৩ জন প্রতিনিধি, যারা বিভিন্ন জেলায় এই বিষয়ে কাজ করছে।

১৪/ পরিচালক, যিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন।

উল্লেখ্য, জাতীয় পরিচালনা বোর্ডের অধীনে প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়নে জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি এবং ইউনিয়ন কমিটি থাকবে। এই আইনের ধারা ৯ অনুযায়ী জেলা কমিটি এবং ধারা ১২ অনুযায়ী উপজেলা, ইউনিয়ন কমিটি গঠিত হবে।

জাতীয় পরিচালনা বোর্ডের কার্যাবলীঃ জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যাবলী ধারা ৭ অনুযায়ী পরিচালিত হবে। সংস্থার কার্যবলী হবে নিম্নরূপঃ

১/ আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীগণকে আইনগত সহায়তা প্রদান সম্পর্কিত নীতিমালা প্রণয়ন করা।

২/ আইনগত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে স্কীম প্রণয়ন করা।

৩/ আইনগত সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা করা।

৪/ আইনগত সহায়তা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করা।

৫/ জেলা কমিটি কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত আবেদন বা দরখাস্ত বিবেচনা করা।

৬/ জেলা কমিটির কার্যাবলী তদারকী ও নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের কার্যাবলী সরেজমিনে পরিদর্শন করা।

৭/ আইন, বিধি ও অন্যান্য তথ্য সম্বলিত ক্ষুদ্র পুস্তিকা (Pamphlet), বই, লিফলেট ইত্যাদি প্রকাশসহ সেমিনার ও কর্মশালার মাধ্যমে জনগণকে আইনগত সহায়তা সম্পর্কে সচেতন করা।

৮/ উপরে উল্লেখিত দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনো কাজ করা।

আইনগত সহায়তা কারা পেতে পারেন বা আইনগত সহায়তা পাবার জন্য কারা আবেদন করতে পারেন? নিম্নে উল্লেখিত ব্যক্তিরা আইনগত সহায়তা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন- 

১/ কর্মক্ষম নন, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন বা বার্ষিক ৬,০০০ টাকার উর্ধ্বে আয় করতে অক্ষম মুক্তিযোদ্ধা।

২/ বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন ব্যক্তি।

৩/ ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ মহিলা।

৪/ পাচারের শিকার নারী বা শিশু।

৫/ এসিডদগ্ধ নারী বা শিশু।

৬/ “আদর্শ গ্রাম”এ গৃহ বা ভূমি বরাদ্দ প্রাপ্ত যে কোনো ব্যক্তি।

৭/ অসচ্ছল বিধবা এবং স্বামী পরিত্যক্তা দরিদ্র নারী।

৮/ শারীরিক বা মানসিক সমস্যার কারণে উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তি এবং সহায় সম্বলহীন প্রতিবন্ধী।

৯/ আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অসমর্থ ব্যক্তি।

১০/ বিনা বিচারে আটক এমন ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আর্থিকভাবে অসচ্ছল।

১১/ আদালত কর্তৃক বিবেচিত আর্থিকভাবে অসহায় কিংবা দরিদ্র কোনো ব্যক্তি।

১২/ জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিবেচিত আর্থিকভাবে অসহায় কিংবা দরিদ্র কোনো ব্যক্তি।

১৩/ আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন, নানাবিধ আর্থ-সামাজিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কোনো ব্যক্তি যিনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্বীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মামলা পরিচালনা করতে অসমর্থ।

আইনগত সহায়তা পাবার জন্য আবেদনঃ আইনগত সহায়তার জন্য ধারা ১৬’তে বলা হয়েছে কিভাবে আবেদন করতে হবে। এছাড়া “আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালা, ২০০১” আবেদন পত্র তৈরি করার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। যেমনঃ

১/ আইনগত সহায়তা পাবার জন্য কোন ব্যক্তি তার নাম, পূর্ণ ঠিকানা এবং সহায়তা চাওয়ার কারণ উল্লেখ করে একটি সাদা কাগজে আবেদন বা দরখাস্ত করবেন।

২/ যে বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হচ্ছে তা যদি হাইকোর্ট অথবা সুপ্রীম কোর্টে বিচারের বিষয় হয় তাহলে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার চেয়ারম্যান বরাবর এবং অন্যান্য আদালতের বিচারের বিষয় হলে জেলা কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে।

৩/ সংস্থা/কোনো জেলা কমিটি বরাবর সহায়তা পাবার জন্য আবেদনপত্র বা দরখাস্ত দাখিল করা হলে সংস্থা/জেলা কমিটি তাতে একটি নাম্বার দিয়ে আবেদনপত্রটির উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংস্থা/জেলা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের ব্যবস্থা করবে।

৪/ আবেদনপত্রে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে যদি সংস্থা/জেলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব না হলে আবেদনকারীকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত তথ্য সরবরাহের জন্য পরামর্শ দিতে পারবে।

৫/ সংস্থা বা জেলা কমিটির সভায় আবেদনপত্রটির আলোকে আইনগত সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তা সংস্থা বা জেলা কমিটি কর্তৃক আবেদনকারীকে জানানো হবে।

যদি কোনো আবেদনকারীর আবেদন জেলা কমিটি কর্তৃক নাকচ হয় তাহলে সেটা মঞ্জুরীর জন্য ঐ আবেদনকারী তার আবেদন নাকচ হওয়ার তারিখ হতে ৬০ দিনের মধ্যে সংস্থার নিকট আপীল পেশ করতে পারবেন এবং এ ব্যাপারে সংস্থার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

আইনটির সমস্যাসমূহঃ “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০” একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন হলেও এর বেশ কিছু সমস্যা পাওয়া যায়। এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে না পারলে আইনটি নামে মাত্র আইনে পরিণত হবে। সমস্যাগুলো যেমনঃ

  • প্রতি মাসে একবার করে জেলা কমিটির সভা/বৈঠক হয়ে থাকে। যে সমস্ত আবেদনকারী আইনগত সহায়তা পাবার জন্য জেলা কমিটি বরাবর আবেদন করেন তাদের আবেদনগুলো এই মাসিক বৈঠকে অনুমোদন করা হয়। কিন্তু কোন দরিদ্র বিচারপ্রার্থী যদি একটি বৈঠক সমাপ্তির পর আবেদন বা দরখাস্ত করেন তাহলে সেটা অনুমোদনের জন্য পরবর্তী বৈঠক পর্যন্ত অর্থাৎ ১ মাস অপেক্ষা করতে হয়। যেটি দ্রুত ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে বিলম্ব ঘটায়। সুতরাং জেলা কমিটির বৈঠক মাসে অন্তত ২টি করে হওয়া উচিত।
  • এই আইনটিতে জাতীয় পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এবং জেলা কমিটিসমূহের সদস্যের দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্চতা নিশ্চিত করা হয়নি। প্রতিটি কমিটির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সদস্য পর্যন্ত সবাই ঠিক মত তাদের দায়িত্ব পালন করছেন কিনা কিংবা দায়িত্বে অবহেলা করছেন তা তদারকির কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি এতে। এই আইনে যদি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত না করা হয় তাহলে আইনটি অন্যান্য নামে মাত্র আইনের মতই আইনে পরিণত হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
  • কমিটির সদস্যরা সবাই অভিজাত কিংবা উচু শ্রেণীর। যার কারণে তারা দরিদ্র শ্রেণীর সমস্যাগুলোর গভীরতা বুঝতে ব্যর্থ হন বলে প্রতীয়মান হয়। সমাজের অন্যান্য শ্রেণীর প্রতিনিধিদেরকেও কমিটিতে স্থান দেয়া উচিত।
  • উপজেলা এবং ইউনিয়ন কমিটিতে উপজেলা/ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ঐ উপজেলা/ইউনিয়নের মেম্বারদের অন্তর্ভূক্তি আইনগত সহায়তা প্রদান ব্যাপারটিকে জটিল করে ফেলেছে। কারণ বেশির ভাগ সময় দেখা যায় যে আইনগত সহায়তা চাওয়া ব্যক্তিরা এই চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কার্যকলাপের ভিকটিম।
  • আইনগত সহায়তা পাবার উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তিকে তার নাম, পূর্ণ ঠিকানা এবং সহায়তা চাওয়ার কারণ উল্লেখ করে একটি সাদা কাগজে আবেদন করতে হয়। কিন্তু যারা নিরক্ষর কিংবা লিখতে জানেন না তাদের জন্য এভাবে সবকিছু লিখে আবেদন করা সম্ভব নয়। তাই লিখতে জানেননা এবং নিরক্ষর বিচারপ্রার্থীদের জন্য মৌখিক আবেদনের ব্যবস্থা রাখা উচিত।
  • জাতীয় পরিচালনা বোর্ড এই আইনের আওতায় আইনগত সহায়তার মামলাসমূহ পরিচালনার জন্য জেলা আদালতে মামলা পরিচালনায় কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আইনজীবিদের মধ্য থেকে একটি তালিকা প্রণয়ন করবে। এই তালিকার আইনজীবিরাই দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের জন্য মামলাগুলোতে লড়তে পারবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকাটা নতুন আইনজীবিদের দরিদ্র জনগনকে সাহায্য করার ইচ্ছায় বাঁধা স্বরূপ। এছাড়া ৫ বছরের অভিজ্ঞ আইনজীবিরা তাদের নিজেদের কাজে বা মামলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ কারণে এই ৫ বছরের অভিজ্ঞতার ব্যাপারটা আরো কমিয়ে আনা উচিত।

About চাটিকিয়াং রুমান

সবসময় সাধারণ থাকতে ভালোবাসি। পছন্দ করি লেখালেখি করতে, আনন্দ পাই ডাক টিকেট সংগ্রহ করতে আর ফটোগ্রাফিতে, গান গাইতেও ভালবাসি। স্বপ্ন আছে বিশ্ব ভ্রমণ করার...।।

Posted on সেপ্টেম্বর 19, 2012, in আইন and tagged , . Bookmark the permalink. 24 টি মন্তব্য.

  1. দেশে সব আছে বটে! তবে বিচার শুধু গরীবের জন্য!

  2. খুব দরকারি আর তথ্যবহুল লেখা। সুন্দর।।

  3. আপনার সাথে সহমত, উপজেলা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কমিটিতে রেখে বিচারপ্রার্থীদের জন্য একটু জটিল করে তোলা হয়েছে, আমাদের দেশে এই সব চেয়ারম্যান কোন পক্ষে থাকে সেটা সবাই জানে! কৃতজ্ঞতা, এই আইন সম্পর্কে আগেই কিছুই জানতাম না।

    • আমাদের দেশের উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ভূমিকা সবার জানা। নিজেদের প্রভাব কাটিয়ে এরা বেশিরভাগ সময় ভিকটিমদের বিপক্ষে যান! অথচ সেই ভিকটিমরা তাদের কাছে ধরনা দেয় ন্যায় বিচারের আশায়।

      ধন্যবাদ আমিনুল ভাই পাশে থাকার জন্য।

  4. খুব ভারী লেখা মনে হচ্ছে !!!!

  5. খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা লেখা লিখেছো- অনেকদিন পর তোমার লেখা পেলাম!
    এই বিষয়টি যাদের জন্য তাঁদের অনেকেই এই আইনটি সম্পর্কে জানে না। এর প্রচারণা দরকার। আরেকটি জিনিস, তুমি যেহেতু আইন পেশার সাথে জড়িত- বলতে পারবে এই আইনে কতজন সাহায্য পেয়েছে?

    • আপনাকেও অনেকদিন পর আমার ব্লগে দেখলাম!

      আপনার সাথে একমত, এই “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন” যাদের জন্য তাদের অনেকেই এ ব্যাপারে জানেন না। এর প্রধান কারণ হলো এ বিষয়টি সম্পর্কে প্রচারণার অভাব। প্রচারণার অভাবেই অনেক অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন মানুষ আইনগত সহায়তা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

      ২০০০ সালে এই আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ১০-১২ হাজার অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন মানুষ সরকারীভাবে আইনী সহায়তা পেয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিবছর যে পরিমাণ তহবিল বরাদ্দ দেয়া হয় বছর শেষে তা হতে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ থেকে যায়। এর কারণ ঐ একটাই, প্রচারণার অভাব।

      • সুবিধাপ্রাপ্তদের সংখ্যাটা জানতাম না। জেনে ভালো লাগলো। তোমার কি মনে হয়- সংখ্যাটা পর্যাপ্ত? আমি ঠিক জানি না। তবে এই আইনগত সহায়তার আসলেই প্রচারণা প্রয়োজন আছে।
        ভালো থেকো রুমান।

        • সুফলপ্রাপ্তদের এই সংখ্যাটা অপর্যাপ্ত বলে আমার মনে হয় না। কারণ সরকারীভাবে এই আইনী সহায়তা প্রদান ছাড়াও অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন মানুষদের বেসরকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃকও আইনী সহায়তা দেয়া হয়। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে- বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), মাদারীপুর লিগ্যাল এইড এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম উল্লেখযোগ্য।

  6. দরকারী একটা বিষয়ে লিখেছ। এই আইন সম্পর্কে বেশি করে প্রচারণার প্রয়োজন। বিশেষ করে তাদের মাঝে যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে ন্যায় বিচার বঞ্চিত।

    ভালো থেক।

  7. যদিও আইন ১২ বছর পূর্বে প্রণয়ন হয়েছিল, আপনার জন্য এই আইন সম্পর্কে আজকে জানতে পারলাম। প্রচারণার অভাবের এখন অনেক অসহায়, সম্বলহীন মানুষেরা এই আইন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

    আমার মনে হচ্ছে এই আবেদনের প্রক্রিয়াটা একটু জটিল এবং সময়সাপেক্ষ, তাই এভাবে আইন পাওয়ার অধিকারীরা সহজে এতে জড়াতে যাবে না, আরএকটু সহজ হলে ভালো হত।

    সঠিক ভাবে আইনের প্রচারণা ও বাস্তবায়ন চাই।

    সর্বশেষে বলতেই হয় সরকার দেশের অসহায় ও সম্বলহীন মানুষের কথা চিন্তা করে এটাই বড় কথা।

    অনেক ধন্যবাদ এই বিষয় প্রচার করার জন্য। সরকার প্রচারণা না করলেও, তার প্রচারণার দায়ভার আমাদেরকেই নিতে হবে।

    • এটা ঠিক যে, এই ব্যাপারে প্রচারণা বাড়াতে পারলে এর সুফল আরো অনেকেই পাবেন নিঃসন্দেহে। আর আবেদনের প্রক্রিয়াটা নিরক্ষর অসহায়দের জন্য জটিল, কারণ তারা লিখিতভাবে আবেদন করতে জানেন না। নিরক্ষর অসহায়দের জন্য মৌখিকভাবে আবেদনের ব্যবস্থা রাখা উচিত। তবে এটা ঠিক যে, একটা আবেদন অনুমোদন পেতে প্রায় ১ মাস পর্যন্ত সময় নেয়। এ কারণে কমিটিসমূহের বৈঠক মাসে ২ বার করে হওয়া উচিত।

      “আইনগত সহায়তা প্রদান আইন” প্রণয়ন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই আইনটির প্রচার বাড়াতে পারলে আরো অনেক অসহায়, সম্বলহীন মানুষ আইনগত সহায়তা পাবে নিঃসন্দেহে। এছাড়া আমরা যারা আইনটি সম্পর্কে অবগত আছি তারা চাইলে খুব সহজে এ ব্যাপারে প্রচারণা চালিয়ে অসহায় সম্বলহীনদের আইনী সহয়তা পেতে সজাগ করতে পারি।

      আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই কায়সার ভাই। ভালো থাকুন সব সময়।

  8. ব্যতিক্রমী এবং বেশ প্রয়োজনীয় পোস্ট।
    এরকম কিছু পোস্ট যেন মাঝে মাঝে পাই, তাহলে আমরা সাধারণ জনগণ যারা, তাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে।

    ধন্যবাদ রইল রুমান ভাই।

মন্তব্য করুন