স্মৃতিচারণে নজরুল (ছবি সহ)

২৫শে মে ২০১২ইং প্রাণের কবি, প্রেমের কবি, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কবি, বিদ্রোহী কবি, চির তারুণ্যের কবি, সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৩ তম জন্মবার্ষিকী। কবির জীবনকাল প্রায় ৭৭ বছরের (১৮৯৯-১৯৭৬) হলেও তাঁর সৃষ্টিশীল জীবন মাত্র ২৩ বছরের (১৯১৯-১৯৪২)। কিন্তু তারই মাঝে তিনি আত্মপ্রকাশ করেছেন অনেক রূপে। তিনি একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, সমালোচক, শিশুসাহিত্যিক, গীতিকার, গীতালেখ্য ও গীতিনাট্য রচয়িতা, সুরকার, স্বরলিপিকার, গায়ক, বাদক, সংগীতজ্ঞ, সংগীত পরিচালক, সাংবাদিক, সম্পাদক, পত্রিকা-পরিচালক, অভিনেতা, চলচিত্র-কাহিনীকার এবং চলচিত্র-পরিচালক।

“বল বীর-
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি, নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর-
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলোক ভেদিয়া,
খোদার আসন “আরশ” ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর!”

“তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল-বোশেখীর ঝড়।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!”

“আমার চক্ষে পুরুষ-রমনী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

“নিশি ভোর হ’ল জাগিয়া
পরান-পিয়া।
কাঁদে “পিউ কাহাঁ” পাপিয়া
পরান-পিয়া।।”

“শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে নয়নে বারি ঝরে।
ভুলিও স্মৃতি মম নিশীথ স্বপ্ন সম,
আঁচালের গাঁথা মালা ফেলিও পথ ‘পরে।।”

এ ধরনের আরো অসংখ্য কবিতা, গানের মত ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ রচনা করে গেছেন এই বিদ্রোহী কবি।

এবার চলুন দেখে নেয়া যাক কবিকে নিয়ে কয়েকটা ফটোগ্রাফিঃ

কবির হাতের লেখা একটা কবিতার অংশবিশেষ

প্রথম যৌবনে কবি

সৈনিকের পোষাকে বিদ্রোহী কবি

১৯২৪ সালে ২৫ বছর বয়সে প্রেমের কবি

১৯২৬ সালে চট্টগ্রামে কবির বন্ধু হাবিবুল্লাহ বাহারের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বাঁশি বাজানো অবস্থায় বিদ্রোহী কবি (২৭ বছর বয়সে)

আজিজ মঞ্জিলে কবি; চট্টগ্রামে কবির বন্ধু হাবিবুল্লাহ বাহারের বাড়িতে

গজল রচনার যুগে

১৯৩০ সালে ৩১ বছর বয়সে বিপ্লবের কবি

৪২ বছর বয়সে কবি

২৪শে মে ১৯৭২ইং বিপ্লবী কবিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

১৯৭৪ সালে শেষ বয়সে কবি

১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে একুশে পদক গ্রহণের মূহুর্তে

কবির মৃত দেহের সামনে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

১৯৭৬ সালের ২৯ আগষ্ট, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কবির জানাজায় হাজারো মানুষের ভীড়

About চাটিকিয়াং রুমান

সবসময় সাধারণ থাকতে ভালোবাসি। পছন্দ করি লেখালেখি করতে, আনন্দ পাই ডাক টিকেট সংগ্রহ করতে আর ফটোগ্রাফিতে, গান গাইতেও ভালবাসি। স্বপ্ন আছে বিশ্ব ভ্রমণ করার...।।

Posted on মে 24, 2012, in স্মৃতিচারণ and tagged , . Bookmark the permalink. 16 টি মন্তব্য.

  1. তিনি ছিলেন সকলের পারনের কবি।

  2. চমৎকার পোষ্ট। নজরুল আমার প্রিয় কবি। কয়েক দিন আগে তার রচিত এবং কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উৎসর্গিত সঞ্চয়িতা পড়লাম। অনেক কিছু বুঝতে পারি নাই কিন্তু তার লেখার দক্ষতা কি ছিল তা মনে গেঁথে গেল, কেন তার বই উঁচু ক্লাসে পড়ানো হয় তা বুঝতে বাকী ছিল না।

    (রুমান ভাই, আপনার কাছে একটা ব্যাপারে সরি করছি। আমি চট্রগ্রামে দুইদিন ছিলাম, আপনার সাথে দেখার ইচ্ছা থাকলেও দেখা করতে পারি নাই। কারন সময় পাই নাই। ছেলেকে নিয়ে বলতে গেলে রাস্তায় রাস্তায়/ সি বিচ পতেঙ্গাতে অনেক সময় কাটিয়ে আর হাতে সময় ছিল না। আপনার কথা বার বার মনে পড়ছিল। বাটালী হিল জয় করেছে আমার ছেলে ও স্ত্রী! বাটালী হিলে সিঁড়ি না হলে আরো ভাল হত। পাহাড়ে উঠার কষ্ট কি তা আরো বুঝতে পারত। দুপুরের দিকে উঠেছিলাম, তবে খুব গরমের কারনে আমরা অনেক ঘেমে গিয়েছিলাম।

    যাই হোক, আশা করি মনে কিছু নিবেন না। আবার চট্রগামে আসার ইচ্ছা আছে। আশা করি দেখা হবেই।)

  3. ছবিগুলো দেখে অনেক ভাল লাগল ।

  4. প্রিয় কবিকে নিয়ে পোস্ট, ভাল না লেগে পারা যায়। সেই সময়ের তুলনায় কবি ছিলেন প্রচন্ড রকমের আধুনিক। আর বিদ্রোহ নিয়ে কবিতাগুলো যেন মন জাগিয়ে তোলে প্রতিবাদে।

    ধন্যবাদ রুমান ভাই, এমন চমৎকার পোস্ট উপস্থাপন করবার জন্য।

  5. নজরুল তৈরি হয়না, কেউ তৈরি করতে পারেনা, নজরুল শুধু জন্মায়।
    যা পৃথিবীতে শুধু একবারই।

মন্তব্য করুন